মঙ্গলবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

রাজকন্যা, রানী ও বোকা প্রজাদের গল্প


            ( রাজকন্যা, রানী ও বোকা প্রজাদের গল্প )
বহু বছর আগে এক বিশাল রাজ্য ছিলো। সেই দেশে রাজত্ব করতো সাদা চামড়ার লোকেরা।
প্রায় দুইশ বছর রাজত্ব করার পর যুদ্ধে পরাজিত হয়ে সাদা চামড়ার লোকেরা রাজ্য ছাড়লো বিশাল রাজ্যকে দুই ভাগ করে দিয়ে। দেশ ভাগ হলো ধর্মের ভিত্তিতে। একভাগে পড়লো মুসলিমরা ও অন্যভাগে পড়লো হিন্দু ধর্ম অনুসারীরা।মুসলিম রাজ্যে আবার দুটো ভাগ পশ্চিম আর পূর্ব। পশ্চিম আর পূর্বের প্রজাদের মাঝে সাংস্কৃতি -ঐতিয্যে ও জীবনযাত্রায় আবার ব্যাপক তফাত। পশ্চিম অংশের আধিপত্য বেশি তারা সব কিছুই পূর্বাংশের প্রজাদের চাপিয়ে দেয় আর সুফল ভোগ করে পশ্চিমারা। এভাবেই চললো দুই দশকেরও বেশি সময়। পূর্বারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ালো।পূর্বাদের নেত্রীত্বে এগিয়ে এলেন একজন নেতা শুরু হলো যুদ্ধ।স্বাভাবিক ভাবেই একটি নতুন রাজ্য যখন ভাগ হয় তখন স্বাভাবিক ভাবেই কিছু প্রজা রাজ্য ভাগের পক্ষে থাকে আর একভাগ থাকে রাজ্যভাগের বিপক্ষে। যারা রাজ্যভাগের বিপক্ষে ছিলো তারা পূর্বাদের উপর ব্যাপক হত্যা, লুটতরাজ, ধর্ষন চালালো ,এদের নাম দেয়া হলো যুদ্ধাপরাধী। বিপক্ষ শক্তি পরাজিত হলো।রাজ্য ভাগ হয়ে জন্ম নিলো এক নতুন রাজ্যের।



নতুন রাজ্য নেতা হলেন রাজা। রাজা তার মহনুভবতায় যুদ্ধের বিপক্ষের সকল কে ক্ষমা করলেন। কিন্তু ক্ষমা করলো না দেশের প্রজারা! যাই হোক ভালোই চললো কিছু দিন তারপর রাজার কিছু সৈন্য বেঁকে বসলো। কোন একদিন গভীর রাতে কিছু বিপথগামী সৈন্য এসে হামলা চালালো রাজপ্রাসাদে। রাজা সপরিবারে মারা গেলেন। বিদেশে থাকাতে বেঁচে গেলেন রাজকন্যা ও তার ছোট বোন।
























রাজা মারা যাবার পর আরো কিছু ক্ষনস্হায়ী রাজা এলেন, গেলেন। তারপর দেশ শাসনে এগিয়ে এলেন সেনাপতি। সেনাপতি হলেন রাজা। সেনাপতি রাজা হলেন আর প্রজারা পেলো তাদের সুন্দরী রানীকে।
এই রাজার ভাগ্যেও সুখ বেশি দিন সইলো না। এই রাজাকেও হত্যা করা হলো। রানী বিধবা হলেন, দুই এতিম বাচ্চা কে নিয়ে নিঃস্ব রানী পথে নামলেন।                                                                                                                                     

সেনাপতি রাজা মারা যাবার পর আবারো দেশ দখল নিলেন তৎকালীন সেনাপতি। স্বৈরাচারী সেনাপতি দেশ শাসন করলেন একে একে নয়টি বছর।

সেনাপতি স্বৈরশাসক আবার মহাগুনী কবিতা লেখেন , গান লেখেন আর নারী জাতির প্রতি বিশেষ ভাবে দূর্বল। ধীরে ধীরে প্রজারা স্বৈরশাসকের বিপক্ষে একত্রিত হতে লাগলো। দেশে ফিরে এলেন রাজকন্যা, রানীও স্বামী শোক কাটিয়ে এলেন দেশ সেবা করতে। দুজন একত্রিত হলেন সেনাপতি স্বৈর শাসকের বিরুদ্ধে। সেনাপতি সিংহাসন ছাড়তে বাধ্য হলেন। তার নতুন জায়গা হলো ১৪ শিকের জেলখানা। 
স্বৈরাচারের পর দেশে এলো গনতন্ত্র। প্রজারা ভোট দিলেন।ভোটে জয়লাভ করলো রানী। রাজকন্যা খুব আশাহত হলেন। রানী আর রাজকন্যার মুখ দেখা দেখি বন্ধ। কেও কাউকে দেখতে পারেন না। রানীর জন্য নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেল। এবার ক্ষমতায় এলেন রাজকন্যা। যথারীতি রাজকন্যা আর রানীর শত্রুতা বেড়েই চলছে, প্রজারা মাঝখানে নাভিশ্বাস অবস্হা। রাজকন্যার ক্ষমতা শেষের দিকে। প্রজাদের দাবী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। কিন্তু প্রজাদের দাবী অপূর্ন রেখেই রাজকন্যা ক্ষমতা ছাড়লেন।
এদিকে ক্ষমতার প্রয়োজনে রানীও জোট বেঁধেছেন যুদ্ধাপরাধীদের সাথে। আবারো ক্ষমতায় আসলেন রানী।রানী আর রাজকন্যা জিক জ্যাক করে ক্ষমতায় বসেন , একবার রানী আর একবার রাজকন্যা। দুজনেরই স্বজনরা সব পকেট ভারী করে করে একেকজন শিল্পপতি, কোটিপতি। রাজকন্যাও নিজ স্বার্থে যুদ্ধাপরাধীদেরর সাথে আত্মীয়তা করতে ছাড়েন না। রানী ,রাজকন্যা ও রাজপরিবারের সদস্যরা ও তাদের মন্ত্রীরা নিজেরা ধনী থেকে ধনীতর হোন আর প্রজারা গরীব থেকে গরীবতর হয়। প্রজারা অতিস্ঠ। প্রজারা চাইলো নতুন কিছু। রাজকন্যা ও রানীর নতুন জায়গা হলো জেলখানা।
কিন্তু রাজকন্যা আর রানী ছাড়া সিংহাসনে বসবার মতো নতুন কাউকে প্রজারা পেলো না। আবার ও সিংহাসনে বসলো রাজকন্যা। রাজকন্যার ও ক্ষমতা শেষের দিকে, রাজকন্যা এবার প্রজাদের দাবী পুরনে নজর দিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতার করলেন। শুধু একজন যুদ্ধাপরাধী সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যেতে সমর্থ হলেন।
বিচার শুরু হলো। বন্দি যুদ্ধাপরাধীদের রেখে রায় বের হলো পলাতক যুদ্ধাপরাধীর। বিচারে পলাতক যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় হলো।
প্রজারা খুশী রায়ে, রাজকন্যাও খুশী। রাজকন্যাও নতুন দাবী তুললেন আমাকে আগামীবার ক্ষমতায় আসতে দিন বিচার করবো সকল যুদ্ধাপরাধীদের। রাজ্য যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায়ে প্রজারা খুশিতে সবাই অনলাইনে পত্রিকায় বিজয়ের বন্যা বইয়ে দিলেন। আর রাজকন্যা বললেন নে বাবা তোরা এখন খুশিতে নাকে তেল দিয়ে ঘুমা!!!!!!


পরিশেষেঃ
বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায় এ সবাই খুশি। আমি খুশি হতে পারিনি।
ফাঁকা মাঠে সবাই গেম খেলতে পারে , পলাতক আসামীর ফাঁসির রায় দিয়ে লাভ কি? যারা আটক আছে তাদের ফাঁসি দিয়ে দেখাক!!!আমার মনে হয়েছে আমাদের প্রজাদের নিয়ে আমাদের শাসকরা মজা করেন, ব্যাপারটা এমন অনেক হয়েছে এখন তোরা মুখে আঙ্গুল দিয়ে ললিপপ খা আর নাকে তেল দিয়ে ঘুমা!!!

আমি কোন রাজনৈতিক দলের না। কিন্তু জনগনের মগজ ধোলাই দেখতে ভাল লাগে না!!! সরকার চাইলে কাওকে গ্রেফতার করতে পারে না এটা ঠিক বিশ্বাস করতে কস্ট হয়। মানিকগন্জের ধর্ষক, বা ইডেন কলেজের এসিড সন্ত্রাসী কাউকে ধরতেই সরকারের বেগ পেতে হয়নি। যত সমাস্যা বাচ্চু রাজাকার আর সাগর রুনির হত্যাকারীদের ধরতে। আর বিচারের নামে ১০ বছরের প্রহসন চলেছে আরো ৫ বছরের নকশা আঁকা শেষ।

কারো খারাপ লাগলে নিজ দ্বায়িত্বে পড়বেন। কোন ভুল থাকলে জানাবেন আমি এডিট করে দেবো

ছবিঃ গুগলের সৌজন্যে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন