রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

এই ছবিটা আমাদের কাছে খুব আনন্দের

এই ছবিটা আমাদের কাছে খুব আনন্দের। কিন্তু এই ছবির বিষয়ে আমাদের মনে কি কখনো কোনো প্রশ্ন জেগেছে?

দীর্ঘ নয় মাস অসীম সাহস আর দেশপ্রেম বুকে নিয়ে যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিল। আর আমাদেরকে এই নয় মাস সহযোগিতা দিয়েছিল ভারত (যদিও নিজেদের স্বার্থে)। বিজয়ের মাত্র ১১ দিন আগে মুক্তিবাহিনীর সাথে যুদ্ধে যোগ দেয় ভারতীয় বাহিনী। ওই ১১ দিন যৌথ আক্রমনের সময় মুক্তি
যোদ্ধারা থাকত ফ্রন্ট লাইনে (সম্মুখ ভাগে), আর তাদের সাপোর্টিং ব্যাকআপ হিসাবে পেছনে থাকত ভারতীয় বাহিনী। অর্থাৎ প্রায় পুরো নয় মাস মুক্তিবাহিনী অস্ত্র হাতে একাই লড়েছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। আর যুদ্ধটা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ।

সেই হিসেবে পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণ করার কথা ছিল মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক কর্নেল আতাউল গনি ওসমানী'র কাছে। যদি কোনো কারনে তিনি উপস্থিত থাকতে না পারেন, তাহলে মুক্তিবাহিনীর সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের কাছে অথবা উনার পরবর্তী কমান্ডারের কাছে অথবা কোনো একজন সেক্টর কমান্ডারের কাছে। মোটকথা, ওইসময় সেখানে উপস্থিত থাকা মুক্তিবাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডারের কাছে।

কিন্তু চিরাচরিত ভারতীয় অপকৌশলের অংশ হিসাবে ভারতীয়রা মুক্তিবাহিনীর প্রতিনিধি না রেখে পাকবাহিনীকে আত্মসমর্পণ করালো তাদের কাছে। পাকিস্তানী জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণ করলেন ভারতীয় জেনারেল অরোরার কাছে। এমনকি ভারতীয়দের তৈরি করা আত্মসমর্পণের দলিলেও মুক্তিবাহিনীর কোনো প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়নি। ভারত পুরো বিশ্বকে দেখালো যে, পাক-ভারত যুদ্ধে ভারতের কাছে পরাজিত হয়ে পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করেছে এবং বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। সেই হিসাবে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এবং ঐতিহাসিক রেকর্ডগুলোতে ১৯৭১ এর যুদ্ধ যতটা না বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হিসাবে পরিচিত, তার চেয়ে বেশি পরিচিত পাক-ভারত যুদ্ধ হিসাবে। চোখ-কান খোলা রেখে জানার চেষ্টা করলে এই জিনিসটি সহজেই নজরে পড়বে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সরাসরি যুদ্ধ করলো মুক্তিবাহিনী, আর আত্মসমর্পণের আসল কৃতিত্ব নিল ভারত। দাদারা চিরকালই আমাদের সাথে গুটিবাজি করে আসলো। তারা কখনো ভারতবর্ষের পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশ) মুসলমানদেরকে মন থেকে স্বাধীন জাতি হিসাবে মেনে নিতে পারেনি। এদের ষড়যন্ত্র প্রকাশ হতে শুরু করে ১৯০৫ এর বঙ্গভঙ্গের সময় থেকে। নিজেদের স্বার্থে ৭১ এ আমাদেরকে সাহায্য করেছিল এবং স্বাধীনতার পরেই তারা আসল চেহারা প্রকাশ করে। তবুও আমরা অকৃতজ্ঞ নই। তাই গত ৪২ বছর ধরে তাদের হাজারো অত্যাচার সয়ে সেই ঋণ শোধ করে আসছি।

কথাগুলো যুক্তিযুক্ত মনে হলে পোস্টটি শেয়ার করার অনুরোধ রইলো। সবাইকে গৌরবোজ্জ্বল বিজয়ের অগ্রিম শুভেচ্ছা।

Courtesy: ফেসবুক পেজ "অই ছেড়ি, ওড়না গলায় না দিয়া বুকে দে, কামে দিবো..."

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন