জন্মই যেন আমাদের আজন্ম পাপ, আর সেই পাপ মোচন করতেই অনেককেই পুরে অঙ্গারে হতে হয়, কংক্রিটের নিচে চাপা পরতে হয়। হত্যা, খুন, গুম ধর্ষনের বলি হয়েও আমরা অনেকেই পাপ মোচন করে থাকি। আমি দার্শনিক নই, অনুভব ও অনুভূতির উর্ধে খালি চোখে স্পস্ট প্রতীয়মান – এই মৃত মানুষ গুলোর কি খুবই উচ্চাকাঙ্খা ছিল? তারা কি উচ্চভিলাসি? অবশ্যই না; শুধু মাত্র দু-বেলা খেয়ে বেচে থাকার নিরন্তন প্রচেস্টার লড়াইয়ে তারা সৈনিক মাত্র। হল মার্কের ৪,০০০ কোটি টাকা, পদ্মা সেতু, শেয়ার বাজার বা অতি সম্প্রতি সোনালি ব্যাঙ্কের ১,৬০০ কোটি টাকা জালিয়াতির কোন খবরই সম্ভবত তাদের কাছে ছিল না। সিঙ্গাপুর থেকে তারেক বা কোকোর কত টাকা দেশে ফেরত আনা হয়েছে সেটাও এই বলি হয়ে যাওয়া মানুষ গুলোর কাছে ভিত্তিহীন ছিল।
কত সপ্ন ও অনুভূতির মৃত্যু? ছোট ছেলেটা হয়ত তার বাবাকে বলেছিল রঙ্গিন একটা শার্ট কিনে দেবার জন্য, স্ত্রী হয়ত স্বামীকে বলেছিল যে আসার পথে বাজার থেকে ভাল কিচ্ছ মাছ কিনে আনার জন্য কারন ছোট খুকি কয়েকদিন যাবত মাছ খাবার বায়না ধরেছে যে! কারো হয়তো কিছু দিন পরেই বিয়ের পিড়িতে বসার কথা, মেয়েটার মনে সে কি আনন্দ অনাগত সুখ-সমৃদ্ধ জীবনের কথা ভেবে! কারো অসুস্থ বাবা-মায়ের হয়তো ঔষধ শেষ হয়ে গিয়েছে, বাড়ি ফেরার পথে হয়তো তা নিয়ে আসবে তার উপার্জন-ক্ষম একমাত্র সন্তান!
এত নিষ্পাপ অনুভূতির মৃত্যুর ক্ষত কি রাষ্টীয় শোক দিবস পালন করলেই সেরে যাবে? মৃত মানুষ গুলো আর কোন দিন ফিরে আসবে না। আহত-নিহতদের চিকিতসা ও সাহায্য এখন অতিব প্রয়োজন যা কিনা রাষ্টীয় শোকের আতলামীর চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ন। অবিলম্বে দ্বায়ী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে দৃস্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যাবস্থা করা না হলে আরো অনেক মৃত্যু আমাদের দেখতে হবে। আমাদের দেশে রাজনৈতিক ও সামাজীক অবস্থান গুলোতে যে ভয়াবহ অবক্ষয় বিরাজমান তা দুর করা না গেলে অদুর ভবিষ্যতে বছরের ৩৬৫ দিনকেই রাষ্টীয় শোক দিবস হিসেবে আমরা পাব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন