বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

এখন পর্যন্ত ৫০ জন শহীদ

সোনার বাংলা আজ পরিণত হয়েছে মহাশ্বশানে। হত্যা, গুপ্ত হত্যা, ধর্ষণ, গণ ধর্ষণ চারিদিকে কেবলই পৌশাচিক বিভৎসতা। সভ্যতার দম্ভচূড়ায় দাড়িয়ে বিশ্ব কি করে জানবে বাংলাদেশের অপর নাম জাহান্নাম? কি করে বিশ্বাস করবে বিশ্ব বিবেক যে বাংলাদেশে আওয়ামী সরকারের মাত্র আড়াই বছরে দেশে খুন হয়েছে সাড়ে আট হাজার, দুঃস্বপ্নেও কি কখনো ভাবতে পারে যুদ্ধ ছাড়াই কোন দেশে সরকারের মাত্র আড়াই বছরে ধর্ষিত হয় ১ হাজার ২ শত ৩৯ জন মা-ভগ্নি-কন্যা? যুদ্ধের সময়েওকি কোন দেশের সীমান্তে মাত্র আড়াই বছরে প্রাণ হারায় ১৮৩ নিরীহ নাগরিক, তথাকথিত বন্ধুদেশের বিএসএফের পৈশাচিকতায় যা ঘটে গেলো বাংলাদেশে? অথচ এটিই এখন বাংলাদেশের বাস্তবতা। না, মু মুহূর্তে বাংলাদেশ কোন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সাথে প্রত্যক্ষ সমরে অবতীর্ণ নয়, চলছে না ভয়ংকর কোন গৃহযু্দ্ধ। তবুও প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের প্রতিটি কোনে কোনে কেন এই রক্ত ক্ষরণ? তবে কি বাংলাদেশের সরকার জনগণকেই প্রতিপক্ষ মনে করে, তবে আওয়ামী সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ১৬ কোটি নিরীহ শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশীদের সাথে?
কি অপরাধ বাংলাদেশের? কি অপরাধ বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের? এক সাগর রক্তের বিনিয়মে অর্জিত স্বাধীনতাকে প্রতিবেশী বন্ধুবেশী হায়েনাদের হাত থেকে রক্ষার প্রত্যয়ে উজ্জীবিত বাংলাদেশীর নির্ভেজাল দেশপ্রেমই কি অপরাধ? ৯০ শতাংশ মুসলিম জনতার আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপনই কি অপরাধ? অন্যায়, অপশাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশী মানুষের রুখে দাড়ানোই কি অপরাধ?
বাঙলার স্বাধীনতা র্সূয যেমন পলাশীর প্রান্তরে অস্তমিত হয়েছিল মীরজাফরের মতো নর্দমার কীটের ষড়যন্ত্রে, আজো তেমনি বাংলার রক্তিম সূর্য ঢেকে দিতে চায় শেখ হাসিনার অস্পৃশ্য আঁচল। কে না জানে, প্রতিবেশী দেশের ষড়যন্ত্রে, আতাতের নির্বাচনে ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ। কেন এসেছে তারা ক্ষমতায় তাও কারো অজানা নয়। দেশের তেল-গ্যাস-সমুদ্রবন্দর দিতে হবে প্রভুদের, দিতে হবে ট্রানজিট ট্রান্সশিপমেন্ট। অথচ ইতোমধ্যে চলে গেছে আড়াইটি বছর। প্রভুদের তীব্র তাড়নায় বেসামাল আওয়ামী সরকার, বিরক্ত আওয়ামী লীগের প্রভূরাও। চারি দিকে শত্রুবেষ্টিত ভারতের কাছে বাংলাদেশের আওয়ামী কৃতদাসেরাই মরুভূমির মাঝে মরুদ্যানসম। দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষায় ঢাকাকে দিল্লির প্রয়োজন ষোলো আনার উপর আঠারো আনা, এমনটাই দাবী ভারতীয় আনন্দবাজার পত্রিকার।
আওয়ামী লীগ জানুক বা নাই জানুক, তাদের প্রভূরা জানে, আওয়ামী লীগের দিন শেষ হয়ে এসেছে বাংলাদেশে। দশটাকা সের চাল আর ঘরে ঘরে চাকুরীর যে মহা প্রতারণার ফাঁদে বন্দী করে বাংলাদেশের ঘাড়ে সিন্দাবাদের ভুতের মতো জেকে বসেছে আওয়ামী লীগ, দুটো বছর যেতে না যেতেই বাংলার মানুষ প্রচন্ড আছাড়ে আওয়ামী মসনদ চূর্ন বিচুর্ন করে দিতে আজ বেপরোয়া। আর তাই ড্রাকুলার মতো ক্ষিপ্রতায় বাংলাদেশকে চুষে চুষে আখের ছোবড়া বানাতে পাগলপ্রায় আওয়ামী লীগের প্রভুরা। ওরা জানে, ষড়যন্ত্র করে বার বার ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা যাবে না আওয়ামী লীগকে, জানে আমৃত্যু বোকা বানানো যাবে না ষোলকোটি বাংলাদেশীকে।
আওয়ামী লীগও জানে, প্রভুদের আস্থা ধরে না রাখতে পারলে জনরোষে ভষ্ম হতে হবে। জানে, লাঞ্ছনাকর ক্ষমতাচ্যূত হয়ে ওদের ঠাই নিতে হবে প্রভূদের পায়েই। আর তাই যে কোন মূল্যে প্রভূদের পায়ে তেল মর্দনে ব্যস্ত ওরা। তড়িঘড়ি একের পর এক অপমানজনক চুক্তিতে দেশকে শৃংখলিত করছে আওয়ামী লীগ। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সম্পদ শোষণে প্রভূদের সহায়তা দিতে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ। আর তাই গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করছে আওয়ামী লীগ। তুলে দেয়া হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো একটি মীমাসিংত ব্যবস্থা। বিশ্ব দরবারে এক ঘরে করে বাংলাদেশকে কেমবল মাত্র ভারতের সেবাদাসে পরিণত করতে সংবিধান থেকে মুছে ফেলা হয়েছে ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশসমূহের সাথে সম্পর্কের ধারা। ব্রাহ্মণ্যবাদীদের তুষ্ঠ করতে, বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশকে হেয় করতে সংবিধান থেকে তুলে দেয়া হয়েছে আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের ধারা। ক্রমাগত খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশকে। আর এভাবেই বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে অনিশ্চয়তার মাঝে ঠেলে দিচ্ছেন শেখ হাসিনা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন