শুক্রবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

বায়তুল মোকাররমে যেভাবে সংঘর্ষের সূত্রপাত

বায়তুল মোকাররমে যেভাবে সংঘর্ষের সূত্রপাত

রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে ইসলামী দলগুলোর পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি থাকার কারণে জুমার নামাজে আগত মুসুল্লিরা নিরাপত্তার নামে পুলিশি হয়রানির শিকার হয়।

উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসল্লি মসজিদের ভিতর ঢুকে পুলিশের এ আচরণের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় মুসল্লিরা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকে, “শাহবাগের নাস্তিকদের নিরাপত্তা সরকার পুলিশদের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে পারে অথচ নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের নিরাপত্তার নামে আটক করা হচ্ছে। এটা হতে পারে না।”

এক পর্যায়ে পুলিশের আচরণে মুসল্লিরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতে থাকে। এ অবস্থায় খেলাফত মজলিসের ঢাকা মহানগরের এক নেতা পরিস্থিতি শান্ত করতে উত্তেজিত মুসল্লিদের ভেতরে নিয়ে যান।

এ সময় টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান ও ফটো সাংবাদিকরা ছবি নেয়ার জন্য জুতা নিয়ে মসজিদে ভিতরে ঢুকলে মুসল্লিরা আবারো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। কিছু মুসল্লি সামনের দিকে এগিয়ে এলে কয়েকজন সাংবাদিক টেলিভিশনের বুম মুসল্লিদের সামনে ধরে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকে।

বাংলাভিশনের রিপোর্টার কাওছার শাহিন মুসল্লিদের কাছে জানতে চান-আপনারা কি যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে এ আন্দোলন আসছেন কিনা? জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক ভাবে মুসল্লিরা আবারো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এবং বলতে থাকে ‘সাংবাদিকরা নাস্তিক’। এরপর থেকে মুসল্লিরা সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিকদের জুতা দেখায় এবং স্থান ত্যাগ করার আহ্বান জানান।

এরই জের ধরে মুসল্লিরা সাংবাদিকদের উপর একের পর এক হামলা শুরু হয়। এ হামলায় আহত হয় এটিএন বাংলার ক্যামেরাম্যান এস এম তুহিন ও মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের রিপোর্টার আব্দুল্লাহ তুহিন।

নামাজের সময় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকলেও সালাম ফিরানোর সঙ্গে সঙ্গে নারায়ে তাকবির দিয়ে শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে মুসল্লিরা। তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের এ বাধাকে অতিক্রম করে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তোপখানা রোডের ওপরে ওয়ার্কার্স পার্টির তোরণ ভেঙ্গে ফেললে পুলিশ অ্যাকশনে যায়।

হাজার হাজার লোকের এ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করতে মিছিলের মাঝখানে পুলিশের গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় মিছিলের একটা অংশ মৎসভবনের দিকে যায়, আরেকটি অংশ বিজয় নগর, গুলিস্তান ও দৈনিক বাংলার দিকে ছুটে যায়।

মিছিলটি তাৎক্ষণিকভাবে শেষ করতে পুলিশ অতিরিক্ত সাউন্ড গ্রেনেড, ফাঁকা গুলি, টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। মুহূর্তের মধ্যে পল্টনসহ আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন